লটকনের বৈজ্ঞানিক নাম ব্যাকারিয়াস্যাপাডিয়া। ইংরেজিতে লটকনকে বলা হয় বার্মিজ গ্রেপ। বাংলাদেশে লটকন এলাকাভেদে বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন হাড় ফাটা, ভুবি, কানাইজু, লটকা, লটকাউ, লোটকা ইত্যাদি। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র লটকন গাছ হয়। বাংলাদেশ ছাড়া মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডে লটকন বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ হয়।
প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ১৭৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ১৬৯ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১৩৭ মিলিগ্রাম শর্করা, ১০০ মিলিগ্রাম লৌহসহ মোট ৯২ কিলোক্যালরি খাদ্য শক্তি রয়েছে। যা আমাদের জাতীয় ফল কাঁঠালের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। লটকনের বীজ মূল্যবান রং উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। সিল্ক, তুলা ও পোশাকশিল্পে এ রং ব্যবহার করা হয়। নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, কুড়িগ্রাম, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, সিলেটের বেশ কিছু এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে লটকন চাষ হচ্ছে। বাংলাদেশ ছাড়া মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডে লটকনের বাণিজ্যিক চাষ হয়।
বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের খাদ্য ও পুষ্টিবিষয়ক বিভাগের প্রধান ফারাহ মাসুদা বলেন, লটকনে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। দিনে মাত্র দু-তিনটি লটকন খেলে শরীরের ভিটামিন সি-এর চাহিদা পূরণ হয়। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ৫.৩৪ মি. গ্রাম আয়রন থাকে। রক্ত ও হাড়ের জন্য আয়রনের বিশেষ প্রয়োজন। মহিলাদের সুস্থতায় আয়রন খুব প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
লটকন যেমন খালি খাওয়া যায়। তেমনি এর আচার খুব জনপ্রিয়। লটকনের সঙ্গে মরিচের গুঁড়া, পাঁচফোড়ন, বিটলবণ, চিনি, সাদা ভিনেগার দিয়ে মিষ্টি আচার তৈরি করা যায়। লটকন ভর্তাও খেতে দারুণ মজা। এ জন্য লাগবে ধনিয়াপাতা, লাল গুঁড়ামরিচ, বিটলবণ, কাসুন্দি, চটপটির মাসলা।
উপকরণগুলো পরিমাণমতো মিশালেই হয়ে যাবে সুস্বাদু লটকন ভর্তা। উজ্জ্বল রঙের লটকন কেনা ভালো। এগুলো বেশি মিষ্টি হয়। ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় প্রতি কেজি লটকন বিক্রি হচ্ছে। এখন লটকনের মৌসুম। তাই পরিবারের পুষ্টি চাহিদা মিটাতে লটকন কেনা যেতে পারে।