অস্থির হয়ে ওঠেছে মাংসের বাজার। রাজধানীতে আবারও বাড়ছে গরু ও মুরগির মাংসের দাম। পাশাপাশি ঊর্ধ্বমুখী ডিমের দামও। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তীব্র গরমে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার কারণেই বাড়ছে ডিম ও মাংসের দাম।
শুক্রবার (১০ মে) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কেরানীগঞ্জের জিনজিরা, আগানগর এবং রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও হাতিরপুল কাঁচাবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহ ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ১০ টাকা, আর ডিমের ডজনে ২০ টাকা পর্যন্ত।
বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২২০-২৩০ টাকা, সোনালি মুরগি ৪০০ টাকা, দেশি মুরগি ৭২০-৭৫০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা ও লাল লেয়ার ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়।
বিক্রেতারা জানান, গরমে মুরগি মরার প্রভাব পড়েছে বাজারে, যে কারণে দাম বাড়ছে। রাজধানীর কারওয়ানবাজারের কিচেন মার্কেটের মামা ভাগিনা চিকেন ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী মো. দিদার হোসেন বলেন,
আর কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের মুরগি বিক্রেতা রিপন বলেন, বাজারে সোনালি মুরগির সরবরাহে সংকট চলছে, যার কারণে দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহ থেকেই প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৯০-৪০০ টাকায়, যা সামনে আরও বাড়তে পারে।
এদিকে, ডিমের বাজারেও দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। সপ্তাহ ব্যবধানে ডজনে দাম বেড়ে গেছে ২০ টাকা পর্যন্ত। মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকা, আর সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২০০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, তীব্র গরমে মরে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে অনেকেই আগেভাগে বিক্রি করে দিচ্ছেন মুরগি। এতে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন ব্যবস্থা। এর প্রভাব পড়ছে ডিমের দামেও।
ক্রেতারা জানান, দিনকে দিন সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে ডিম-মুরগির দাম। এখনই দামের লাগাম টেনে না ধরলে ডিম-মুরগি কেনা অসম্ভব হয়ে উঠবে।
তবে ডিম-মুরগির দাম বাড়ার পেছনে সিন্ডিকেটকে দায়ী করে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। এর সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, গরমের তীব্রতা কমার সঙ্গে সঙ্গে প্রান্তিক খামারিদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করে মুরগি ও ডিম উৎপাদনে বিশেষ নজর দিতে হবে। এছাড়া দীর্ঘ মেয়াদে ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে এগুলোর বাজার। কারণ ক্ষুদ্র খামারিরা উৎপাদনে না ফিরতে পারলে বাজারে অস্থিরতা আরও বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সিন্ডিকেটের কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে প্রান্তিক খামারিরা। মূলত তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির নির্দেশে সারা দেশে এর দাম নির্ধারণ হয়। আগের দিন রাতেই মেসেজের মাধ্যমে দাম চলে যায় দেশের ডিম ব্যবসায়ীদের কাছে। সে দাম অনুযায়ী ডিম বিক্রি হয়।
এদিকে, বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে মাংসও। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০-৮০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকায়।
বিক্রেতারা বলেন, কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরু বিক্রি করছেন না খামারিরা। এতে সরবরাহ ঘাটতিতে দাম বেড়ে গেছে গরুর। এ দাম না কমলে মাংসের দাম সামনে আরও বাড়বে।