গাজীপুরের শ্রীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের ধারণা, প্রথমে স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। স্ত্রীকে হারানোর ব্যথা সইতে না পেরে পরবর্তীতে স্বামীও গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এর আগে একটি চিরকুট লিখে রেখে যান স্বামী।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে উপজেলার মুলাইদ গ্রামের মো. ফারুক খানের বহুতল ভবনের নিচ তলার একটি কক্ষ থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘মা-বাবা আমাকে মাফ করে দিও, আমি তোমাদের সঙ্গে থাকতে পারলাম না। আমার জান আমার জন্য ফাঁসিতে ঝুলেছে। তাই আমি থাকতে পারলাম না। আমি কাউকে দোষারোপ করি না। কারও কোনো দোষ নাই। আমার জান আমার জন্য অপেক্ষা করতাছে। সবাই ভালো থাকবা। মো. ইসরাফিল।
আরও লেখা রয়েছে, ‘মা আমার পাশে রোকেয়ার কবর দিও মা। মা আমি জানি না আমার জান কেন ফাঁস দিলো। তার জন্য আমি দায়ী। এতে কারও কোনো দোষ নাই।
মরদেহ উদ্ধার হওয়া দুজন হলেন- শেরপুরের ঝিনাইগাতি থানার হলদি গ্রামের মো. মফিজুল হকের ছেলে মো. ইসরাফিল (১৭) ও ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারি গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে মোছা. রোকেয়া খাতুন (১৫)।
স্থানীয়রা জানান, প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে সাত-আট মাস আগে পরিবারের অমতে বিয়ে করে তারা। শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামের মো. ফারুক হোসেনের বহুতল ভবনে ভাড়া থেকে ইসরাফিল স্থানীয় একটি ওয়ার্কশপে ও রোকেয়া স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বাবা-মায়ের পাশাপাশি ফ্ল্যাটে বসবাস করত ইসরাফিল ও তার স্ত্রী রোকেয়া। সম্প্রতি ইসরাফিল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) তাদের বুঝিয়ে বাসায় আনা হয়েছিল। শুক্রবার সকালে ইসরাফিলের ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে যান বাবা মফিজুল। এ সময় ইসরাফিলকে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রোকেয়ার মরদেহ খাটের ওপর বিছানায় দেখতে পান তিনি। পরে সেখানে একটি চিরকুটও পান মুফিজুল।
শ্রীপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাখাওয়াত হোসেন মরদেহ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।